বর্তমানে দেশের রিজার্ভ কত?

বর্তমানে দেশের রিজার্ভ কত?

আমরা সকলে জানি উন্নয়নশীল দেশে আমদানি-রফতানির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। রিজার্ভ তলানিতে নেমে যাওয়ায় একশ ভাগ শিক্ষিতের আমদানিনির্ভর দেশ শ্রীলংকাকে কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল তা সবারই জানা। বাংলাদেশও আমদানিনির্ভর দেশ। গত এক থেকে দেড় বছর ধরে রিজার্ভের ঊর্ধ্বগতির সুখবর নিয়মিত প্রচার করা হচ্ছে গণমাধ্যমে।   বর্তমান সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সরবরাহ করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। চলতি নভেম্বরের শুরুতে ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এ রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার মাধ্যমে জানা যায়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। এখান থেকে সরকারি ক্রয়ে ডলার ছাড় করা হয়। আবার প্রতিমাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রতিনিয়ত রেমিট্যান্স পাঠাতে থাকেন। এক্ষেত্রে বলা যায় প্রতিদিনই রিজার্ভ কম-বেশি হয়। তবে আমাদের যে রিজার্ভ পজিশন সেটিতে ভয়ের কিছু নেই। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী নভেম্বরের প্রথম ১৮ দিনে প্রায় ১০৬ কোটি (১০৫ কোটি ৯৯ লাখ) ডলার বা ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতি ডলার ১০৮ টাকা হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। প্রবাসী আয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি নভেম্বরের পুরো সময়ে ১৭৬ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

সরকার এখন বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমদানিতে লাগাম টেনেছে। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের সরকারি খরচে বিদেশভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়লেও আমদানিতে লাগাম টেনে সরকার প্রতিমাসে ৭ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ব্যয় রাখতে পারবে। আইএমএফ বলেছে, রিজার্ভ থেকে যেসব বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা বাদ দিয়ে রিজার্ভের প্রকৃত হিসেব করতে হবে। কারণ, রিজার্ভের এসব অর্থ চাইলেই ফেরত পাওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের (বিআইডিএফ) কোনো প্রকল্পে রিজার্ভ থেকে অর্থায়ন না করতে বলেছে সংস্থাটি। জারে ডলার নেই বলে বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশি মুদ্রার মান ধরে রাখতে ডলার বিক্রি করছে। তবে রিজার্ভ কিন্তু দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমাদের ডলারের প্রধান উৎস হচ্ছে রেমিট্যান্স আর রফতানি আয়। এগুলো কমছে। এছাড়া অতি ধনী লোকরা বিদেশে কার্ব মার্কেটের (খোলাবাজার) মাধ্যমে ডলার নিয়ে নিচ্ছে। এদেশ থেকেও পাচার হচ্ছে। হুন্ডির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় গিয়ে হলেও রেমিট্যান্স বৈধ উপায়ে আনতে হবে।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )